বৃজরাজ মহলের ভৌতিক ঘটনা - কি এমন হয় সেখানে


বৃজরাজ মহলের ভৌতিক ঘটনা - কি এমন হয় সেখানে


আসসালামু আলাইকুম! আশা করি সবাই ভালো আছেন...

এই পৃথিবী বড়ই  রহস্যজনক। রহস্যভেদ করার শুরু রয়েছে কিন্তু শেষ কোথায় তা জানা যায় না। অনেক সময় আমরা আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হিমশিম খাই অথবা সেই ঘটনাগুলোর নির্দিষ্ট কোন ব্যাখ্যাই পাওয়া যায় না। পৃথিবীতে ভালো-মন্দ দুটোরই অবস্থান রয়েছে সমানভাবে। সব ধর্মেই মৃত্যু অনিবার্য এবং চিরন্তন সত্য। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মৃত্যুর পরে শুধু যে খারাপ অশরীরী পৃথিবীর বুকে রয়ে যাবে এমনটি তো হতে পারে না! তাহলে ভালোগুলো যায় কোথায়? পৃথিবী সময়ের সাথে সাথে দিন দিন বদলে যাচ্ছে সেই সাথে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিও। দুঃখের ব্যাপার এই যে বিজ্ঞান অনেকদূর এগিয়ে গেলেও অশরীরী বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দিতে আজও ব্যর্থ।

ছবিঃ বৃজরাজ মহল

ব্রিটিশদের কথা মাথায় আসলেই মনে পড়ে যায় তাদের অত্যাচারের কথা। ভয়ঙ্কর সেই কষ্টের দিনগুলো যেন চোখের সামনেই ভাসতে থাকে। পুরোনো দিন স্মৃতিচারণ করা অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ এবং ভারত ব্রিটিশদের নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়েছিল তা আমরা সবাই জানি। বৃজরাজ ভবন প্রাসাদ যেটি ভারতের রাজস্থান শহরের কোটায় অবস্থিত। ব্রিটিশরা এক সময় সেই প্রাসাদেই অবস্থান করতো। সেই সময়ই শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ সিপাহীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। ব্রিটিশদের অন্যায় মেনে না নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয়রা আন্দলনের মাধ্যমে কড়া জবাব দেয়। যার ফলে ব্রিটিশ সিপাহীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের উপর জুলুম আরও দিগুন ভাবে বাড়িয়ে দেয়। ভারতীয়দের নির্মমভাবে অকাতরে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে ব্রিটিশদের ভারতীয়রা যেখানে যেভাবে পেরেছিল তাদেরকে হত্যা করেছিল। এভাবেই একদিন সিপাহীদের বিদ্রোহের সামনে পড়ে যান 'মেজর বার্টন'। মেজর বার্টন দুই ছেলে নিয়ে বৃজরাজ ভবনে থাকতেন তিনি। সিপাহীরা মেজর বার্টনসহ তার দুই ছেলে সন্তানকে হত্যা করেন। কিন্তু সিপাহীরা শেষ পর্যন্ত তাকে ঐ প্রাসাদ ছাড়া করতে পারেনি। জানা যায় তার অতৃপ্ত আত্মা আজও ঘুরে বেড়ায় সেই বৃজরাজ ভবনে।

কিছুদিন পর সেখানে বেড়াতে যান কোটার এক রানী। মেজর বার্টনকে যে রুমে হত্যা করা হয়েছিল সেই রুমই পরবর্তীতে বসার ঘরে পরিনত করা হয়েছিল। সেখানেই বেশ কিছু সময় কাটিয়েছিলেন কোটার রানী। তিনি পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পেরেছিলেন যে, কোন অতৃপ্ত আত্মা ঘোরাঘুরি করে এই বসার ঘরে। তারপর তিনি প্রায় বেশ কিছুদিন মেজর বার্টনকে দেখতে পান। তিনি এই ব্যাপারটি পরবর্তীতে একটি সাক্ষাতকারে প্রকাশও করেছিলেন। প্রায় ১৯৮০ এর দশকের দিকে ঐ ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। তারপর প্রাসাদটি পরিবর্তন হয় একটি বিলাশবহুল হোটেলে। ভবনটি এমনিতেই অনেক বড় আর প্রাচীন নকশার জন্য সবার নজর কারতো। ব্রিটিশরা ঐ ভবনে থাকার ফলে অনেকের মনেই সাধ হতো একবার সেই সময়ের প্রাচীন ভবন ঘুরে দেখার। হোটেলে রূপান্তরিত হওয়ায় পর্যটকরা প্রায়ই বেড়াতে যেতেন শুধুমাত্র ঐ ভবন এবং মেজর বার্টনকে এক ঝলক দেখতে। অনেক পর্যটকরা বলেন এখানে বৃদ্ধ একটি মানুষকে মাঝরাতে লাঠি হাতে ঘুরতে দেখা যায়। তার পরিহিত পোশাক সম্পূর্ণ ব্রিটিশদের পোশাকের মতই তাই ধারণা করা হয় তিনিই মেজর বার্টন। অধিকাংশ মানুষ বলেন মেজর বার্টনকে সবাই দেখেছেন এবং তারা দাবী করে বলেন এই ভবনে মেজর বার্টন রয়েছেন। কিন্তু কখনো কাউকে ভয় দেখানো বা কারো কোন প্রকারের ক্ষতি করে নাই। এই মতামতের সাথে সম্মতি জানান ঐ ভবনের পাহারাদাররা। তারা বলেন তিনি খুব রাগি মানুষ। তিনি কাজে কাউকে ফাকি দেওয়া দেখলে কষিয়ে থাপ্পর মেরে দেন। অনেকে ভয় পেয়ে কাজ ছেড়ে চলে যান। বর্তমানে এই সব কিছুই রহস্য যার সত্য মিথ্যা যাচাই করতে যাননি কেউই।


বিঃদ্রঃ বর্ণিত ঘটনাটা সত্য নাকি মিথ্যা তা ভালোভবে বলা যায় না। এখানে যা যা বলা হয়েছে তা সবকিছুই লোককথা এবং ইন্টারনেটের ওপর ভিত্তি করে বলা হয়েছে। এই ঘটনা কারও মতের বিরোধিতা করে না। এখানে সবকিছুই আপনার মতের ওপর স্থিত!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন